শাকিব খান এর জীবনী













শাকিব খান বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা,চলচ্চিত্র প্রযোজক
ও সবচেয়ে পারিশ্রমিক পাওয়া নায়ক।
তার প্রকৃত নাম মাসুদ রানা। তবে চলচ্চিত্র অঙ্গনে তিনি শাকিব খান নামেই পরিচিত।
.
জন্ম ও পরিচয়ঃ ১৯৭৯ সালের গোপালগন্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলায় জন্মগ্রহন করেন।
তার পিতার নাম আব্দুর রব এবং মাতা নুরজাহান। পিতা একজন সরকারী কর্মচারী ও মাতা গৃহিণী।
পরিবারে তার একজন ভাই ও বোন আছে।
.
বাল্যকালের জীবনঃ পিতা সরকারী চাকরি করায় তাকে নারায়নগন্জ জেলায় বেড়ে উঠতে হয়েছে।
বলতে গেলে, শৈশব ও কৈশরকাল তিনি নারায়নগন্জ জেলায় অতিবাহিত করেছেন।
.
শাকিব খানের লেখাপড়াঃ শাকিব খান এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন,
"""আমার ইচ্ছা ছিল ডাক্তার বা ইন্জিনিয়ার হওয়ার।
কারণ আমি সায়েন্সের ছাত্র ছিলাম। বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে সকলের উপকার করব
এছাড়া ইন্জিনিয়ার হওয়ারো তীব্র ইচ্ছা ছিল। তবে এইচএসসি পরীক্ষা
দেবার পর সব ইচ্ছা কেমন জানি এলোমেলো হয়ে গেল!"""
.
চলচ্চিত্রে অভিষেক হওয়াঃ ১৯৯৯ সালে গুণী নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহানের
"অনন্ত ভালবাসা" সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার।
.
অন্যান্য ছবিঃ অনন্ত প্রেম ছবিটি ব্যবসা সফল নাহলেও নায়ক হিসেবে শাকিব
খান অনেকের চোখ কাড়েন। এরি পরিপেক্ষিতে ২০০০ সালে সেই সময়ের অপ্রতিদ্বন্ধি
নায়িকা শাবনুরের সাথে প্রথম ছবি করে সকলের নজর কাড়েন।
এরপর ও প্রিয়া তুমি কোথায় শাবনুর-রিয়াজের ব্যবসা সফল ছবিটিতে সাইড নায়কের
ভূমিকা পালনের মধ্যে দিয়ে সকলের কাছে প্রশংসিত হন।
এরপর তার একের পর এক ব্যবসা সফল সিনেমা মুক্তি পেতে থাকে।
যদিও সিনেমা গুলোতে তাকে সাইড নায়কের ভূমিকা পালন করতে হয়েছে।
স্বপ্নের বাসর সিনেমাটি সেই সময়ের জনপ্রিয় একটি সিনেমা ছিল।
ছবিতে শাকিবের ভূয়সী প্রশংসা করেন সকলে। ২০০৬ সাল ছিল শাকিবের জীবনের স্বর্ণযুগ।
কারণ এ বছরেই শাকিব খান প্রথম বারের মত সেই সময়ের সুপারষ্টার মান্নার সাথে
"সিটি টেরর" নামে ছবি করে উপরে উঠে আসেন।
মূলত শাকিব খান মহানায়ক মান্নার সময়কালে ভাল ভাল ছবি উপহার দিলেও,
মহানায়ক মান্নার জনপ্রিয়তার কারণে তার শাকিব খান নামটি বার বার সকলে আড়ালে চলে গেছে।
কারণ এদেশে জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ্ ও মান্নার ভক্ত সবচেয়ে বেশি।
তাদের মুত্যুর পরেও জনপ্রিয়তা কমেনি, বরং বেড়েই চলছে।
২০০৬ সাল শাকিবের জীবনে নতুন এক অধ্যায় নিয়ে আসে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "সুভা" 
গল্পের আলোকে ছবি নির্মান হয়।
এই ছবিতে পূণিমার বিপরীতে অভিনয় করে প্রশংসিত হোন। সেই সাথে ২০০৭ সালে এই সিনেমার
জন্য লাক্স চ্যানেল আই পারফরমেন্স বছরের সেরা নায়ক হিসেবে পুরুষ্কার পান।
এরপর কোটি টাকার কাবিন নামে একটি সিনেমায় প্রথমবারের মত অপু বিশ্বাসের সাথে কাজ করেন।
পরের বছর মুক্তি পায় চাচ্চু,দাদিমা,আমার প্রাণের স্বামীসহ কয়েকটা ছবি।
প্রতিটা ছবিই ব্যবসা সফল হয়েছিল।
২০০৮ সালে ঢালিউড বাদশা মান্নার মুত্যুর পর থেকে তিনি একক নায়ক হিসেবে ঢালিউডে রাজত্ব করেন।
এক শাকিব খানের সিনেমার কাছে তার সিনিয়র নায়কেরা অতলে ঝরে পড়েন।
যাদের মাঝে সেই সময়কার জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজ, ফেরদৌসও ছিল। দুর্দান্ত গতিতে এগুতে থাকেন শাকিব খান।
এরি পরিপেক্ষিতে নিজেকে সুপারষ্টারের পাশাপাশি ঢালিউডের
সবচেয়ে পারিশ্রমিক পাওয়া নায়ক হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করেন।
২০১০ এর পর, নাম্বার ওয়ান শাকিব খান,মাই নেম ইজ খান,হিরো দ্যা সুপারষ্টার,
কিং খান,ডন নাম্বার ওয়ান, পাংকু জামাই,আদরের জামাই, লাভ ম্যারেজ,বসগিরি,ক্যাপ্টেন খান,শিকারী,ভাইজান,রাজত্ব, নিষ্পাপ মুন্না,ঢাকার কিং,সম্রাট দ্যা মেন্টাল,
মন যেখানে হৃদয় সেখানে,নিঃশ্বার আমার তুমি, সত্ত্বা,জান কুরবানসহ 
অনেক ব্যবসা সফল ছবি উপহার দেন। এ পর্যন্ত প্রায় ২৪৫টি সিনেমা তার মুক্তি পেয়েছে।
.
বিবাহিত জীবনঃ শাকিব খান ২০০৮ সালের ১৮ই এপ্রিল তার সহ অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসকে বিয়ে করেন।














দু'জনার ক্যারিয়ারের কথা বিবেচনা করে তারা বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখে।
আব্রাহাম খান নামে তাদের একটি পুত্র সন্তান আছে। আব্রাহাম ২০১৬ সালের ২৭ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহন করেন।
.
অপুকে বিশ্বাসকে তালাকঃ ২০১৭ সালের এপ্রিলে অপু বিশ্বাস একটি বেসরকারী
একটি টেলিভিশনে তাদের বিয়ের ব্যাপারটি ফাঁস করে দেন। তাদের একটি পুত্র সন্তান আছে
বলে গনমাধ্যমকে জানান। এই খবর প্রচারের পর শাকিব খান অপুর প্রতি ক্ষিপ্ত হন।
এরি পরিপেক্ষিতে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে তাকে তালাক দেন। 
.
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুষ্কারঃ শাকিব খান এ যাবৎ ৩ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুষ্কার লাভ করেছেন।
যাদের মধ্যে,
১। "ভালবাসলেই ঘর বাঁধা যায়না" সিনেমার জন্য সবপ্রথম
২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুষ্কার লাভ করেন।
২। "খোদার পরে মা" চলচ্চিত্রের জন্য ২০১২ সালে দ্বিতীয় বারের মত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পান।
৩। "আরো ভালবাসবো তোমায়" সিনেমার জন্য
২০১৫ সালে তৃতীয় বারের মত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুষ্কার লাভ করেন।
.
মেরিল প্রথম আলো পুরুষ্কারঃ জনপ্রিয় নায়ক সুপারষ্টার শাকিব খান তার
ক্যারিয়ারে আট বার মেরিল প্রথম আলো তারকা পুরুষ্কার লাভ করেন।
যার মধ্যে "আমার প্রাণের স্বামী" সিনেমার জন্য সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে মেরিল প্রথম আলো তারকা
পুরুষ্কার লাভ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে পরবর্তী বছর গুরোর বিভিন্ন সময়ে আরো ৭ বার এ পুরুষ্কার লাভ করেন।
 লাক্স চ্যানেল আই পারফরমেন্স পুরুষ্কারঃ ২০০৬ সালে "সুভা" সিনেমার জন্য, তিনি ২০০৭ সালে লাক্স চ্যানেল আই পুরুষ্কার বিভাগে সেরা নায়ক হিসেবে সম্মাননা পান।
.
সমালোচনাঃ বসগিরি সিনেমার পর থেকেই এই ছবির নায়িকা শবনম বুবলিকে নিয়ে সকলের
কাছে তিনি অধিক সমালোচিত। তবে তার সমালোচনার আরেকটি বিষয় তার খাম-খেয়ালীপনা।
আরো পড়তে পারেন 
নায়ক মান্নার জীবনী  
.
নায়ক সালমান শাহ্ র জীবনী  
.
বাপ্পি চৌধুরী এর জীবনী  
.
আরেফীন শুভ এর জীবনী 

.
প্রভাবশালী সুপারষ্টারঃ ঢালিউডে এ পর্যন্ত চারজন সুপারষ্টার জন্ম নিয়েছেন।
এ চারজন হলেন,
১। নায়ক রাজ রাজ্জাক
২। ইলিয়াস কান্চন
৩। মান্না
৪। শাকিব খান।
এই চারজন সুপারষ্টারের মাঝে জনপ্রিয়তা ও ব্যবসা সফল সিনেমার মাধ্যমে
মহানায়ক মান্না ও শাকিব খান অনেক এগিয়ে। অর্থাৎ প্রভাবশালী সুপারষ্টারের খাতায় মান্নার
পরেই শাকিব খানের অবস্থান। যা সত্যিই শাকিব খানের ক্যারিয়ারকে আলোচিত করে তুলে!!!
Previous
Next Post »