নায়ক মান্নার জীবনী













বাংলাদেশে আশির দশকে চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক নক্ষত্রের আর্বিভাব ঘটেছিল।
তিনি জনপ্রিয় নায়ক ও পলিট্রিক্যাল হিরো মান্না।
মান্নার পরিচয়ঃ পুরোনাম আসলাম তালুকদার।
সকলে তাকে মান্না নামেই চিনেন। ১৯৬৪ সালে টাঙ্গাইলের কালিহাতী
উপজেলায় জন্মগ্রহন করেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ে কর্মজীবনের উদ্দেশ্য ঢাকায় পাড়ি জমান।
মান্নার প্রথম ছবিঃ ১৯৮৪ সালের দিকে মান্না চলচ্চিত্রে নিজের নাম লিখান।
ঐ সময়টি চলছিল রাজ্জাক,
আলমগীর,জসিম,জাফর ইকবাল ও ইলিয়াসদের স্বর্ণ যুগ।
সে সময় তার অভিনীত প্রথম ছবিটি "তওবা" রাখা হয়।
তবে তওবা তার প্রথম ছবি হলেও মুক্তির দিক দিয়ে তার অভিনীত
"পাগলি" ছবিটি মুক্তি পায়।
ঐ সময়টিতে নায়িকাদের মধ্যে চম্পা ও দিতি সুপারষ্টার ছিলেন।
১৯৮৪ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ২য় নায়ক হিসেবে কাজ করেছেন। 
মান্নার প্রথম একক ছবিঃ ১৯৯১ সালে পরিচালক মোস্তফা আনোয়ার নির্মাণ
করেন কাসেম মালাম প্রেম।
এই ছবিটির মাধ্যমেই মান্না একক কোন নায়কের ভূমিকায় ছবিতে নিজের
নাম লিখান। তার নায়িকা হিসেবে এই ছবিতে অভিনয় করেছেন ঐ
সময়কার জনপ্রিয় নায়িকা চম্পা। ছবিটি মুক্তির পর খুব ব্যবসা সফল হয়েছিল।
মান্নার স্বর্ণ যুগঃ কাসেম মালার প্রেম ছবিটি ব্যবসা সফল হবার পর একের পর
এক পরিচালক মান্নাকে নিয়ে ছবি বানাতে থাকেন। বলা হয়ে থাকে, 
মান্নাই একমাত্র নায়ক যিনি কিনা ১০০ জন পরিচালকের হয়ে কাজ করতে সমর্থ হয়েছিল।
তার ছবির পরিচালকদের মধ্যে কাজী হায়াৎ,মালেক আফসারী,ইস্পাহানী আরিফ জাহান,
মোস্তফা আনোয়ার, মাযহারুল ইসলাম প্রমুখ অন্যতম ছিলেন।
একের পর ছবি তৈরি করে এ নায়ক নিজের ভিত্তি স্থাপন করে।
এতে করে পরিচালকেরা অর্থ ইনকামসহ নিজেদের ভিত্তি গড়ে তুলেন।
মান্নার নায়িকারাঃ মান্না তার ক্যারিয়ারে মোট ৬১ জন নায়িকার সাথে ছবি করেছেন।
এদের মধ্যে রয়েছে মোসুমী, শাবনুর,পূর্ণিমা,চম্পা,দিতি, নদী,কবিতা ইত্যাদি।
এদের মাঝে মৌসুমী,পূর্ণিমা ও শাবনুরের সাথে অধিকাংশ ছবি করেছেন।
বলা হয়ে থাকে, মান্নার সাথে যেকোন নায়িকাই ছবি করুক না কেন, তা ব্যবসা সফল হবেই।
বিভিন্ন পুরুষ্কারঃ আম্মাজান ছবিটি বেশ আলোচিত হয়েছিল।
এই ছবির জন্য তিনি বাচসাস পুরুষ্কার লাভ করেন। বীর সৈনিক ছবির জন্য
তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুষ্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ৩ বার
মেরিল প্রথম আলো তারকা পুরুষ্কারে সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরুষ্কার লাভ করেন।
মান্নার অন্যান্য কাজকর্মঃ মান্না একজন সৃজনশীল মানের নায়ক ছিলেন।
তিনি ব্যক্তিগত একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন।
এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি থেকে বহুল ব্যবসা সফল ছবি নির্মাণ করতে সমর্থ হয়েছিল।
ছবি গুলোর মধ্য আব্বাজান, স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ,দুই বধূ এক স্বামী,পিতা-মাতার আমানত অন্যতম।
এছাড়াও তিনি মুত্যুর
আগ পর্যন্ত চলচ্চিত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
মুত্যুঃ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০০৮ সালে ১৭ই ফেব্রুয়ারী তিনি মারা যান।প্রিয়
নায়কের মুত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার প্রথম জানাযা
এফডিসিতে সম্পূর্ণ হয়। দ্বিতীয় জানাযা স্মৃতিসৌধে হওয়ার কথা ছিল।
ভক্তদের ভীড় এবং রাজধানী খুব জ্যাম থাকায় দ্বিতীয় জানাযা সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি।
এরপর উনাকে তার নিজ জেলা টাঙ্গাইলে তার পিতার কবরের সাথে দেওয়া হয়।
Previous
Next Post »